শক্তি ব্যবস্থাপনা

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৫) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - গৃহসম্পদের ব্যবস্থাপনা | | NCTB BOOK
3

অর্থ ও সময়ের মতো শক্তি পরিবারের একটি অন্যতম মৌলিক সম্পদ। মানবীয় এ সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের উপর পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য ও মানসিক পরিতৃপ্তি নির্ভর করে। অন্যান্য সম্পদের মতো শক্তির সদ্ব্যবহারের প্রতি সকলের যত্নবান হওয়া উচিত। চাহিদা পূরণ করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের অনেক কাজ করতে হয়। যে কোনো কাজ এমনভাবে করতে হবে যাতে সে কাজে কম শক্তি ব্যবহার হয়। অথবা একই পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করে যেন অনেক কাজ করা যায়। তাহলেই আমাদের সীমিত শক্তি দিয়ে আমরা অনেক কাজ করতে পারব। শক্তিকে যথাযথভাবে ব্যবহার না করলে তা ক্ষয় হয়ে যায়। ফলে কাজে অনীহা, ক্লান্তি ও বিরক্তির সৃষ্টি হয়। উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শক্তি ব্যবহার করলে, এর অপচয় রোধ করা যায়। শক্তির যথাযথ ব্যবহারের জন্য কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়। যেমন- একটি কর্মতালিকা অনুসরণ করে কাজ করতে হবে।

কোন কাজে কেমন শক্তি ব্যবহার করতে হয়, কীভাবে সহজে কাজটা করা যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

বয়স, ব্যক্তিগত পছন্দ, আগ্রহ অনুযায়ী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কাজগুলো বণ্টন করে দিতে হবে।

কাজের সময় দুই হাত ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া সঠিক দেহভঙ্গি বজায় রেখে কাজ করলে শক্তির অপচয় হয় না। যেমন- দাঁড়িয়ে ঘর মুছলে, বসে ঘর মোছার চেয়ে কম শক্তি ব্যয় হয়।

ভারী কাজের পর বিশ্রাম গ্রহণ বা হালকা কাজ করতে হয়।

বিভিন্ন রকম শ্রমলাঘব যন্ত্রপাতির ব্যবহার করে শক্তির খরচ কমানো যায়। যেমন- প্রেসারকুকার, ওয়াশিং মেশিন, ওভেন, বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি ইত্যাদি। এ ছাড়া শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারে কিছু কৌশল অবলম্বন করে, সহজে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করা যায় ৷ গৃহ ব্যবস্থাপনায় এ রকম কৌশলগুলো কাজ সহজকরণ পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত। কাজ সহজকরণ পদ্ধতিতেগার্হস্থ্য বিজ্ঞান

শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারের প্রয়োজনীয় কৌশলগুলো নিম্নরূপ-

দেহের সঠিক অবস্থান ও সঠিক গতি রক্ষা করে কাজ করা শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য কর্মকেন্দ্রের পরিসর এমন হওয়া উচিত, যাতে দেহের অবস্থান এবং দেহভঙ্গি ঠিক রেখে কাজ করা যায়। কাজের সরঞ্জামগুলো হাতের নাগালের মধ্যে থাকলে শক্তির সাশ্রয় হয়।

কাজের সঠিক স্থান ও সঠিক সরঞ্জামের ব্যবহার- কাজের জন্য নির্ধারিত স্থানে কাজ করলে, কম শক্তি খরচ করে কাজ করা যায়। যেমন-খাবার ঘরে খাওয়ার কাজ সম্পন্ন করা, ধোয়ার স্থানে ধোয়া ইত্যাদি ব্যবস্থাগুলো সুবিধাজনক। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো কাজের স্থানে থাকলে অযথা হাঁটাহাঁটিতে শক্তির অপচয় হয় না। কাজের উপযোগী সঠিক সরঞ্জামও শক্তির সাশ্রয় করে। যেমন- ঘর মোছার জন্য কাপড়ের পরিবর্তে মপ ব্যবহার আরামদায়ক।

সঠিক পদ্ধতিতে কাজ করা- সব কাজের সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে, তা অনুসরণ করে কাজ করলে শক্তির সাশ্রয় হয়। যেমন-অনেক কাপড় আলাদা আলাদাভাবে না ধুয়ে সবগুলো একসাথে সাবান পানিতে ভিজিয়ে রেখে, একত্রে ধুয়ে শুকাতে দিলে কাজ সহজ হয় ও শক্তি বাঁচে।

ব্যবহৃত সামগ্রী পরিবর্তন করা- বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত সামগ্রীর পরিবর্তন করেও শক্তির সাশ্রয় করা যায় । যেমন-খাবার টেবিলে কাপড়ের টেবিল ক্লথ ব্যবহার না করে প্লাস্টিকের টেবিল ক্লথ ব্যবহার করলে শক্তির অপচয় কম হয়।

উৎপাদিত সামগ্রীর মান পরিবর্তন করা উৎপাদিত সামগ্রীর মান পরিবর্তন করেও শক্তি বাঁচানো যায়। যেমনসালাদ বানাতে শসা, টমেটো কুঁচি করে না কেটে স্লাইস করে কাটা যায়। এতে সময় ও শক্তির সাশ্রয় হয় ।

কাজ – দৈনন্দিন কাজে শক্তির সাশ্রয় করার জন্য তুমি কী কী পদক্ষেপ নিতে পার তা লিখে জানাও

Content added By
Promotion